Header Ads Widget

 


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ সামিদের শেষ কথা- বলেছিলাম না মা আজ সরকারের পতন হবে!


বাবলু আকন্দ : হ্যলো, মা বলেছিলাম না আজ সরকারের পতন হবে। কিছুক্ষন পরেই সেনাপ্রধান জাতির উদ্যেশ্যে ভাষন দিবেন, শুনতেছি হাসিনা নাকি দেশ ছেড়ে পলাইছে- এটিই ছিলো বড় ছেলে সামিদের শেষ কথা। ঘটনা প্রবাহ বলতে বলতে বারবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছিলেন মা শিল্পী আক্তার। তার মা আরও বলেন, সকলেই বিজয়ের পতাকা নিয়ে ঘরে ফিরলেও আমার বুকের মানিক ফিরেছে লাশ হয়ে। 

স্বজনরা জানিয়েছেন ৫ আগস্ট সোমবার হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে আজিমপুর বিএনএস এর সামনে পুলিশ ও ছাত্র-জনতার সংঘর্ষ চলছিলো। সামিদ ও তার বাবা ফরহাদ হোসেন সকাল থেকেই ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।  বিকাল ৫টার দিকে হঠাৎ পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন সামিদ। পরে তাকে উদ্ধার করে কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

মুক্তাগাছা উপজেলার মানকোন ইউনিয়নের তেঘুরী গ্রামের ফরহাদ হোসেনের বড় ছেলে সামিদ হোসেন (১৯)। সে কিশোরগঞ্জ পলিটেকনিকেল ইনষ্টিটিউটের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই তার সক্রিয় অংশগ্রহন ছিলো। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিলো ১৯ বছর।

শহীদ সামিদের বাবা বলেন, তার ক্যাম্পাস বন্ধ থাকার কারণে কয়েকদিন যাবত সামিদ আমার চেরাগআলীর বাসায় অবস্থান করছিল। ঘটনার দিন সকালবেলা খাওয়া-দাওয়া করে তার বন্ধুদের সাথে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচীতে অংশনেয়। আমি যাই আমার বন্ধুদের সাথে। পরে বিকেলে খবর পাই আমার ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আমি আমার ছেলের বিচার দাবী করছি।    

সামিদের ছোট ভাই সাকিম হোসেন বলেন, ভাইয়া সবসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাফল্যের কথা বলতেন, সে বলতো ছাত্র আন্দোলনের কখনো বৃথা যায়নি এবারো তার ব্যতিক্রম হবে না।

মানকোন ইউপি চেয়ারম্যন শহিদুল ইসলাম তারা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গিয়ে তেঘুরী গ্রামের ফরহাদ হোসেনের বড় ছেলে সামিদ হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি এবং তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিচার দাবী করছি। 

শহীদ সামিদের বন্ধুমহলের নাসির, রেজাউল, রায়হান, সাকিল ও রানা বলেন সামিদ কোটা বিরোধী আন্দোলনের শুরু থেকে আমাদের সাথে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করে আসচ্ছিলো। ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে সামিদের সাথে তার বাবাও অংশ নেন। বিকাল ৫টার দিকে একটি গুলি সামিদের মাথার বামপাশে লেগে অন্যপাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়, ঘটনা স্থলেই সামিদ মাটিতে লুটিয়ে পরে। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়েগেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। সামিদের বাবার অস্থায়ী নিবাস চেরাগআলীতে ঐদিন রাত ১২ টার দিকে একটি যানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরেরদিন মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) মুক্তাগাছার উপজেলার মানকোন তেঘুরীতে তার নিজ গ্রামে একটি যানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং পারিবাারক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

Post a Comment

0 Comments