ফুলবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার পলাশতলী নিজ পাড়া এলাকায় ফসলি জমির মাটি বিক্রি করায় আশপাশের ফসলি জমির মালিকেরা বিপাকে পড়েছে। জানাগেছে, স্থানীয় মোজাম্মেল এর নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ চক্র জমি মালিকদের প্রলোভন দেখিয়ে ফসলি জমির উপরাংশের মাটি রাতের আঁধারে বিক্রি করে আসছে। এসব জমি থেকে মাটি কেটে গভীর করায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আসপাশের কৃষকরা।
সরেজমিনে পলাশতলী নিজ পাড়া এলাকায় ফসলি জমির মালিকদের সাথে কথা বলে পাওয়া যায় মাটি কাটার চাঞ্চল্যকর তথ্য। মাটি খেকোদের কবলে পড়ে দুই ফসলি উর্বর জমিগুলো ডোবা-নালায় পরিণত হচ্ছে। মাটি কাটার মহোৎসবে জমি গভীর করে পাশের উঁচু জমি মালিকদের অনেকটা বাধ্য করা হচ্ছে মাটি বিক্রিতে। রাতের আধারে জোরপূর্বক ফসলসহ মাটি কেটে নেওয়ার কথাও জানাগেছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় কৃষক শামছুল হক বলেন, মাটি কাটার শুরুতেই আমরা মাটা কাটতে বাধা দেই। তারা আমাদের বাধা মানেনি। মাটি খেকু মোজাম্মেল দালাল তার দলবল নিয়ে রাতের আঁধারে ভ্যেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটেন। ফসলি জমির সুরক্ষার জন্য জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন দিয়ে প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করেন তিনি। এ ঘটনায় দালাল চক্র আরও বেশি ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে তাকেসহ প্রতিবাদকারীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বলে তিনি জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক বলেন, মাটি বিক্রয়কারী দালাল মোজাম্মেল খুবই প্রভাবশালী। আমরা বাধা দিলে বলে উপরের অনুমতি নিয়ে মাটি কাটতেছি। তার কাজ কেউ নিষেধ করতে পারবে না। কৃষকেরা কথা বললে তাদেরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তিনি। তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোজাম্মেল জানান, মাটি বিক্রির অনিমতি নেয়নি, অনুমতি নিবো। আমি অনেক দিন ধরেই এ ব্যবসা করতেছি, কীভাবে কী করতে হবে আমি সবকিছুই জানি।
স্থানীয় সাইফুল ইসলাম ,করিম মিয়া সহ একাধিক কৃষক বলেন, মাটি কাটতে বারণ করায় দালালের লোকজন ভ্যেকুর গ্লাস ভেঙ্গে আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। প্রশাসন অতিসত্বর মাটি কাটা বন্ধ না করলে ভবিষ্যতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফুলবাড়িয়া বাজারের এক ব্যবসায়ি বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যার পরপরই উপজেলা সদর হয়ে বিভিন্ন ইটভাটায় মাটি পরিবহন করা হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার ন‚র মোহাম্মদ বলেন,মাটি বিক্রি করায় জমির টপ সয়েল চলে যাচ্ছে। জমিতে চাষাবাদ ছাড়া টপ সয়েল তৈরী হতে অন্তত ২০ বছরের মতো সময় লাগে। এ বিষয়ে আমাদের সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিলে তাহলে এমন হতো না। মাটি খেকোদের দমন না করলে ভবিষ্যতে কৃষি হুমকিতে পড়বে।
এ ব্যাপারে ফুলবাড়িয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) পায়রা চৌধুরী বলেন, অবৈধ ভাবে যারা মাটি কাটতেছে ইউএনও স্যারের সঙ্গে কথা বলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
0 Comments